ঢাকা , রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ , ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
নতুন বাজেটে বৈষম্য কমবে সব ক্ষেত্রে সংবিধান পুনর্লিখনে গণপরিষদ-আইনসভা নির্বাচন একই হবে ৬০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়ে ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতা অভিযান ফিলিস্তিনিদের দুর্দশাকে ‘যীশু খ্রিস্টের কষ্ট’র সঙ্গে তুলনা কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের সম্পাদকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ,প্রতিবাদে চালকদের মিছিল নরসিংদীতে রাতে স্ত্রীর দিনে স্বামীর লাশ উদ্ধার আইন উপদেষ্টার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে শিবির নেতার স্ট্যাটাস বেশিরভাগ আওয়ামী লীগের নেতা ঢাকায় আত্মগোপনে দিনাজপুরে ৩১৬ চালকলের লাইসেন্স বাতিল জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাভোগী ও সুবিধাবাদী দল নয় - জিএম কাদের এনসিপি’র জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের বয়স হবে সর্বনিম্ন ৪০ আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগ অমানবিক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলসহ পাঁচ দাবি বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের ভর্তুকি মূল্যে পাটের ব্যাগ দেবে সরকার-পরিবেশ উপদেষ্টা তীব্র সঙ্কটেও দেশে গ্যাসের চুরি ও অপচয় বন্ধ হচ্ছে না গাজায় ইসরায়েলি নির্মম গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ নড়াইলে সৌদি প্রবাসী হত্যা হামলা-ভাঙচুরের পর পুরুষশূন্য গ্রাম প্রেস সচিবের মন্তব্যকে ‘অযাচিত’ বলছে ভারত রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
বসতভিটা ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এখনো মানুষের ভিড়

বন্যাকবলিত এলাকায় খাদ্য সংকটে গবাদিপশু

  • আপলোড সময় : ০৯-০৯-২০২৪ ১২:১০:৪০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৯-০৯-২০২৪ ১২:১০:৪০ অপরাহ্ন
বন্যাকবলিত এলাকায় খাদ্য সংকটে গবাদিপশু
লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার চর কাদেরিয়া ইউনিয়ন। চারপাশে থৈ থৈ পানি। বসতভিটা ছেড়ে ইউনিয়নটির আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে হাজারো মানুষের ভিড়। একই সঙ্গে রয়েছে গবাদি পশু। প্রায় তিন সপ্তাহ পানিবন্দি থাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট। বাড়ছে পশুর রোগ-বালাই। গতকাল রোববার সরেজমিনে চর কাদিরার কে এম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় মানুষের পাশাপাশি অবলা প্রাণীর কষ্ট।
এই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের জাকির হোসেন বলেন, গত ১৫ দিন হইছে চারটা গরু নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি। নিজের পরিবারসহ আমিও আশ্রয়কেন্দ্রে থাকি। নিজেরা কোনো রকম খাবার পেলেও গরুর জন্য কোনো খাদ্য পাচ্ছি না। চারপাশ ডুবে যাওয়ায় ঘাস-লতাপাতা নেই। বন্যায় গরুর খড়ও নষ্ট হয়ে গেছে। গরুগুলো দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।
একই গ্রামের মোক্তার হোসেন বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে আমার দুটি গরু আছে। আমার ঘর থেকে পানি নামলেও গোয়ালঘর থেকে পানি নামেনি। এই আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ১০০টি গরুর জন্য আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন থেকে একবার গত সপ্তাহে এক বস্তা ভুসি দিলেও সেগুলো দুদিন পর শেষ। এলাকায় কোথাও ঘাস নেই। কিছু গরু অসুস্থ, সরকারিভাবে কোনো ডাক্তার-কবিরাজ আসছে না।
একই সুরে কথা বলেন জেলার রায়পুর উপজেলার চর কাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষ। সেখানে গত ২৫ আগস্ট দুটি গরু ও একটি ছাগল নিয়ে এসেছেন রিতা আক্তার। তিনি বলেন, ঘরে হাঁটুসমান পানি আসার পর সবাই একসঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে এসেছি। সঙ্গে কিছু ভুসি আর খৈল ছিল। দুদিন খাওয়ানোর পর সেগুলো শেষ। এখন চারপাশে হাহাকার। গত কয়েকদিন রাস্তার পাশে বেঁধে রাখছি, এখন সেই ঘাসও শেষ। কোনো উপায় পাচ্ছি না। সহযোগিতা পেলে গরুগুলোর জান বাঁচতো।
স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় লক্ষ্মীপুর জেলার ৯০ শতাংশ এলাকাই পানির নিচে তলিয়ে গেছে। প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি ছিল। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ লাখে। অনেক কৃষিজীবী মানুষ নিজেদের সঙ্গে পোষা প্রাণীদেরও নিয়ে এসেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।
কমলনগর উপজেলায় ত্রাণ বিতরণে সহযোগিতা করা উদ্দীপ্ত তরুণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ফজলে রাব্বি বলেন, পানিবন্দি হওয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, মানুষের খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। অবলা পশু-পাখির খাবারের সব সূত্র শেষ। মানুষ তো পশু-পাখির জন্য ত্রাণ নিয়ে আসে না। পানি নামছে প্রতিদিন এক থেকে দুই ইঞ্চি। আবার ভারী বৃষ্টি হলে এক ফুট বেড়ে যায়। প্রশাসন যদি খাবারের ব্যবস্থা না করে মানুষ উপার্জনের হাতিয়ার এসব গবাদি পশু হারাবে।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. কুমুদ রঞ্জন মিত্র বলেন, যেখানে খাদ্য প্রয়োজন ১০ কেজি, সেখানে দেওয়া যাচ্ছে এক কেজি। গতকাল রামগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন জায়গায় দিয়েছি। আমরা বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছে সাহায্য চেয়েছি। তবে যারা পশু-পাখি নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আমি লিস্ট করে সাহায্য করার চেষ্টা করবো। স্থানীয়দের অভিযোগ, লক্ষ্মীপুর বন্যার সম্মুখীন হয় খুবই কম। এ এলাকার খাল-বিল নদী দখলের কারণে পানি নামছে না।
কমলনগর উপজেলার স্থানীয় স্কুলশিক্ষক ও নদী আন্দোলন কর্মী সানাউল্লাহ সানু বলেন, লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পূর্বপাশের ভবানীগঞ্জ থেকে তোরাবগঞ্জ বাজার পর্যন্ত সড়কের পাশ দিয়ে মুছার খালের এক মাথা গেছে ওয়াপদা খালে, অন্য মাথা মেঘনায়। প্রায় একশ ফুট চওড়া খালটির ওপর চর মনসা এলাকায় আশপাশের কয়েকটি ইটভাটা বড় বড় রাস্তা তৈরি করে পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে খাল। ফলে পূর্বপাড়ের কয়েক হাজার একর জমিতে ফসল ডুবে গেছে। তিনি বলেন, লক্ষ্মীপুরে একশ’র বেশি খাল রয়েছে। প্রতিটি খাল দখলে। এছাড়া ভুলুয়া মেঘনা নদীতে দখল থাকায় পানি নামছে না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ ও পশু-পাখি। দ্রুত যদি পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার ও খালের পানি নামার ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে জনজীবন বিপন্ন হতে পারে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স